চাকরি ও ফ্যামিলি কনফ্লিক্ট

নির্বাচিত প্রশ্ন - ১

নির্বাচিত প্রশ্নের মূল পেইজ

প্রশ্ন::

একমাস ধরে চাকরিতে ১৪ ঘন্টা করে ডিউটি দিয়েছি। এটাও বলে দিয়েছে- এই টাইমটা পারমানেন্ট ডিউটি আওয়ার। দুপুরে লাঞ্চ বা বাথরুম চাপলেও বের হবার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।আমার মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রনা আমি কাউকেই বুঝাতে পারছি না। হাল্কা আশা করে ছিলাম এটলিস্ট আমার ফ্যামিলি ব্যাপারটা বুঝে আমার জব রিসাইন দেয়া সাপর্ট করবে। কিন্তু এবারও হতাশ হলাম।

তারা যেকোন মূল্যে ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্ট চায়।খুব মনে হচ্ছে কিছুদিন ধরে রাস্তায় চলার সময় তো অনেক মানুষ এক্সিডেন্ট এ স্পট ডেড হয়। সেরকম করে আমার মরে গেলে ক্ষতি কি? আমি চাই আমার ফ্যামিলি এট লিস্ট আমার লাশ দেখে হলেও আমার কষ্ট বুঝতে পেরে কাদুক। জীবনের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু আমার ড্রিমকে স্যাক্রিফাইস করে যে ফ্যামিলির জন্য মরতে আসছি তারাই আমার বেচে থাকার মুল্য বুঝতে পারছে না।এটা খুব কষ্টের, খুব।

বাংলাদেশ ব্যাংকে জব করার জন্য যত প্রিপারেশান নিছি সব ভূলতে বসেছি।অফিসে এক মিনিটও টাইম পাচ্ছি না পড়ার, বাসায় ও না। জব ও কন্টিনিউ করতে পারছি না, ছেড়ে দিলে কি হবে তা ও বুঝি না।

আমার উত্তর::

আজকে আপনার জীবন শেষ হয়ে গেলে, আপনি দুনিয়া থেকে চলে গেলে, দুনিয়ার কারো কিচ্ছু যাবে আসবে না। আপনার ফ্যামিলি না খেয়ে মরে যাবে না। তবে আপনার পরাজয় পার্মানেন্ট হয়ে যাবে। রাস্তার অন্ধ ভিখারি বা কোন হাসপাতালে দশ মিনিটের জন্য ঘুরে এসে বলেন, ওদের চাইতে আপনার কি খুব বেশি কষ্ট? আপনার ঝামেলা কি খুব বেশি?

আর জীবনে জয়ী হতে হলে, প্রথমেই বুঝতে হবে, জয়ী হবার রাস্তা একটা না। হাজারো রাস্তা আছে। হাজারো রাস্তা বদল করে করে, মানুষ সফল হয়। ভাই রক্তের মধ্যে তেজ থাকলে, পরিশ্রম করার তাকত থাকলে, একটা না একটা রাস্তা বের হয়ে যাবেই। সফল হওয়ার একটা রাস্তা হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি। এই রাস্তা গেলেও আরো ৯৯৯ রাস্তা বাকি থাকবে। সো, পরিশ্রম আর ডেডিকেশন ধরে রাখতে পারলে এক দিন না একদিন, একভাবে বা অন্যভাবে সফল হবেনই হবেন।

ফ্যামিলি আপনাকে ছোট বেলা থেকে পালসে। কি পরিমাণ কষ্ট করসে সেটা একটু অনুভব করার জন্য, আজকে ১০ কেজি ওজনের একটা পাথর পেটে বেধে তারপর সেটা পেটে নিয়ে দশদিন ঘুরেন। নিজের রাতের ঘুম হারাম করে, পেটের পাথরটাকে ঘুম পাড়ান। তারপর পেটের পাথর নিয়ে সারাদিন অফিস করেন। তারপর ভাবেন, আপনার পরিবারের কেউ না কেউ আপনার জন্য এই রকম কষ্ট করছে। তারা আপনার পিছনে ইনভেস্ট করছে, এখন সেই ইনভেস্টমেন্ট রিটার্ন দেন।

ফ্যামিলির পাওনা, ফ্যামিলিকে শোধ করতে পারার আগে, হয় তাদেরকে একটু একটু করে বুঝান। না হয় আপনার টার্গেটটাকে হালকা মডিফাই করেন। হয় পরের বছর ট্রাই করলেন, না হয় ব্যাংকে চাকরি করলেন না। ব্যাংকে চাকরি না করে, অন্যরা সফল হয় না?


FB post