Anyone can Program
প্রোগ্রামিং রিলেটেড ১২ ধরনের চাকরি যেখানে প্রোগ্রামিং করা লাগে না। হালকা আইডিয়া থাকলেই চলে।
এই ধরনের চাকরিকে অনেক সময় QA (Quality Assurance) বলা হয়। এদের কাজ হচ্ছে সফটওয়ার টেস্ট করা। ঠিকমতো কাজ করে কিনা যাচাই করা। বেশিরভাগ কোম্পানিতে ২ থেকে ৪জন প্রোগ্রামারের কোড টেস্ট করার জন্য একজন করে QA এর লোক থাকে। সফটওয়ার বানানোর পর সেগুলা কাস্টমারের কাছে রিলিজ করার আগে সেগুলা QA এর লোকেরা চেক করে দেখে সব ঠিক মতো কাজ করে কিনা।
যেমন ধরো একজন একটা সিম্পল ক্যালকুলেটর বানাইছে। সেখানে দুইটা সংখ্যা যোগ করার একটা সিস্টেম আছে। এখন টেস্টিং বা QA এর লোকের কাজ হবে। এই যোগ করার সিস্টেম ঠিকমতো কাজ করতেছে কিনা যাচাই করে দেখা। সেজন্য সে হয়তো প্রথমে ২ আর ৩ যোগ করে দেখবে। এইটা ঠিকমতো কাজ করলে হয়তো শূন্য এবং অন্য একটা সংখ্যা দিয়ে চেষ্টা করবে। তারপর হয়তো দুইটা নেগেটিভ সংখ্যা। একটা নেগেটিভ একটা পজিটিভ। আবার অনেক বড় বড় দুইটা সংখ্যা বা দশমিক ওয়ালা সংখ্যা যোগ করে দেখবে ঠিক মতো কাজ করছে কিনা।
বড় বড় সফটওয়ার ইউজ করার সময় কাস্টমাররা অনেক সময় আটকে যায়। তখন যারা সফটওয়ার বানাইছে তাদেরকে ফোন করে বা ইমেইল করে হেল্প চায়। তখন যারা হেল্প করে তাদেরকে সফটওয়ার সাপোর্ট বা টেকনিক্যাল সাপোর্ট বলে। অনেকটা টেকনিক্যাল কল সেন্টারের মতো।এরা মাঝে মধ্যে গিয়ে ক্লায়েন্টের অফিসে গিয়ে তাদেরকে ট্রেনিং দিয়ে আসে। যারা টেকনিক্যাল সাপোর্টে কাজ করে তাদের সফটওয়্যারের ব্যবহার এবং কিভাবে কাজ করে, ভিতরে ফাংশনালিটি, খুঁটিনাটি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। তবে প্রোগ্রামিং করতে হয় না।
এদের কাজ হচ্ছে কাস্টমার কি চায় সেগুলা বের করা। তারপর ডেভেলপারদের বলা যে কি কি ফিচার যোগ করা লাগবে। এদেরকে প্রোগ্রামিং করতে হয় না। কিন্তু টেকনিক্যাল জিনিসগুলা বুঝতে হয় যাতে ক্লায়েন্টকে বলতে পারে কোনটা করা সম্ভব আর কোনটা সম্ভব না। আবার কোন কাজটা করতে কত দিন লাগতে পারে।
এদেরকে অনেকসময় ডিজাইনার বা ইউজার ইন্টারফেইস (UI) ডিজাইনার বলে। এদের কাজ হচ্ছে কোন জায়গায় কি থাকবে, সেগুলা দেখতে কি রকম হবে, কি কালার দিবে, কয়টা পেইজ হবে। লেখাগুলো বড় না ছোট হবে। কোন চার্ট থাকবে কিনা, ইত্যাদি। গ্রাফিক ডিজাইনার হতে হলে ডিজাইন এর সেন্স থাকতে হবে। ফটোশপ ভালোভাবে জানতে হবে কিন্তু প্রোগ্রামিং লাগবে না।
এদের কাজ হচ্ছে ডিজাইনটাকে যাচাই করা। সফটওয়ারটা ব্যবহার করতে লোকজনের সমস্যা হচ্ছে কিনা। বা কোন জিনিস মানুষ বেশি দেখতেছে আর কোন জিনিস কম দেখতেছে। কোন জায়গার বাটন বামে সরালে বা বড় করলে লোকজনের পড়তে সুবিধা হবে। কোন ফন্ট ইউজ করলে ভালো হবে। কোন চার্ট দেখে লোকজন বুঝতে পারতেছে না সেটা আইডেন্টিফাই করা। তারপর সলুশন দেয়া।
বড় বড় সফটওয়ারের ম্যানুয়াল লেখা লাগে। বেশিরভাগ ওয়েবসাইটে হেল্প পেইজ থাকে। যেখানে গেলে কিভাবে সফটওয়ার ব্যবহার করতে হয় সেগুলা লেখা থাকে। যারা এইগুলা লেখে তাদেরকে টেকনিক্যাল রাইটার বলে। এইসব টেকনিক্যাল রাইটারদের প্রোগ্রামিং করা লাগে না কিন্তু টেকনিক্যাল জিনিসগুলা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আর কোন জিনিস বুঝতে না পারলে সেগুলা ডেভেলপারদের সাথে আলোচনা করে নেয়।
কোন অফিসের কম্পিউটারগুলো সেটআপ করা। নেটওয়ার্কিং করা। সফটওয়্যার ইনস্টল করা। কোন কিছু অটোমেশন করার দরকার হলে করা। কোন হার্ডওয়ার লাগলে কোনগুলা কিনবে, কতগুলা কিনবে, কেনো কিনবে সেগুলা ঠিক করা। এই টাইপের চাকরিতে টুকটাক প্রোগ্রামিং লাগে। তবে ফুলটাইম প্রোগ্রমিং লাগে না।
এইটা অনেকটা সিস্টেম অ্যাডমিন এবং ডেভেলপারের মাঝামাঝি পজিশন। এদের কাজ হচ্ছে কোন একটা সফটওয়ার কিভাবে রিলিজ দিবে। কিভাবে সেটা ক্লায়েন্ট ব্যবহার করবে। কোন সিকিউরিটি ইস্যু আছে কিনা। সার্ভার কাজ না করলে কি করবে এই সব ঠিক করা। এই পজিশনে অনেক কিছু সেটআপ দিতে হয়। এবং সেটআপ দেয়ার সময় কিছু প্রোগ্রামিং করা লাগে। তবে একবার সেটআপ দেয়া হয়ে গেলে আর তেমন প্রোগ্রামিং লাগে না।
সফটওয়ার মার্কেটিং বা বিক্রি করার জন্য কিছু লোক দরকার হয়। এদের কিছু টেকনিক্যাল আইডিয়া থাকা লাগে। তাই তোমার সেলস এর বিষয়ে প্যাশন থাকলে। সফটওয়্যার সেলস এ যেতে পারো।
এদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন সফটওয়ার কোম্পানির জন্য ডেভেলপার হায়ার করে দেয়া বা খুঁজে বের করে দেয়া। এরা ডেভেলপারদের সাথে কথা বলে তাদের স্কিল লেভেল অনুমান করার চেষ্টা করবে। তারপর বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরির ইন্টারভিউ এর জন্য রিকমেন্ড করবে। যদি তার রিকমেন্ড করা লোক ওই কোম্পানি হায়ার করে তাহলে সে একটা কমিশন পায়।
এদের কাজ হচ্ছে সফটওয়্যারের কোন কোন ফিচার কবে ডেভেলপ করা হবে। কোন ডেভেলপার কোন ফিচারটা ডেভেলপ করার কাজ করবে। কতদিন লাগতে পারে। কবে সফটওয়্যার রিলিজ দিবে। সাপ্তাহিক প্ল্যানিং করা। প্রগ্রেস চেক করা, ইত্যাদি ঠিক করা।
বিশ্বাস করো আর নাই করো। তুমি যদি ওয়ার্ডপ্রেসের থিম কাস্টমাইজ না করলে প্রোগ্রামিং ছাড়াই ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলা যায়। কয়েকদিন চেষ্টা করে দেখো তাহলেই বুঝতে পারবে।
তবে যেই চাকরিই করো না কোনো, বাপের হোটেল ছাড়া দুনিয়ার আর কোন আরামের চাকরি নাই। কষ্ট করতে হবে শিখার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে যে লাইনে যাবে সেখানেই শাইন করতে পারবে।
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]